তিন কিশোরের ‘ত্রিভুজ প্রেম’, অতঃপর হোটেলকর্মী ছায়াকে ধর্ষণের পর হত্যা


যশোরে হোটেল কর্মী ছায়া খাতুনকে (১৯) ধর্ষণের পর হত্যা করেছে তিন কিশোর পরিবহন শ্রমিক। ‘ত্রিভুজ প্রেমের’ সূত্র ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জড়িতরা স্বীকার করেছে।  হত্যাকাণ্ডের ১২দিন পর ওই তিন কিশোরকে আটক করে র‌্যাব এ হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করেছে।
শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার খোদাদাদ হোসেন।
আটকেরা হলো, যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার কড়াইতলা গ্রামের আকরামের ছেলে মফিজুর রহমান (১৪), যশোর সদরের সাবলাট গ্রামের আসাদুর রহমানের ছেলে মো. পারভেজ (১৫) ও ঝিকরগাছা উপজেলার ঝাউদিয়া গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে মো. আল আমিন সজিব (১৪)। এই তিনজনই যশোর-নড়াইল ও বাঘারপাড়া রুটে চলাচলকারী বাসের হেলপার।
নিহত ছায়া খাতুন যশোরের শার্শা উপজেলার ত্রিমোহিনী গ্রামের ইমান আলীর মেয়ে ও নড়াইল বাসস্ট্যান্ড এলাকার মফিজুর রহমান বাবুর খাবারের হোটেলের কর্মী। মনিহার বাসস্ট্যান্ড এলাকার মফিজুর রহমান বাবুর খাবারের হোটেলের কর্মী ছায়া হোটেল ভবনের তিন তলায় আরেক কর্মী আমেনা বেগমের সঙ্গে থাকতেন।
হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খোদাদাদ হোসেন জানান, হত্যাকাণ্ডের শিকার হোটেলকর্মী ছায়া খাতুনের (১৯) সঙ্গে মফিজুর ও পারভেজের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা শারীরিক সম্পর্কের দিকে এগোতে চেয়েছিল। কিন্তু মেয়েটি রাজি না হওয়ায় তারা ছায়াকে ধর্ষণ ও হত্যার পরিকল্পনা করে। অপর আসামি আল-আমিনও মেয়েটিকে পছন্দ করতেন। তিনিও ওই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত হন।
সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খোদাদাদ হোসেন আরও জানান, গত ২৩ এপ্রিল শহরের নীলগঞ্জ তাতীপাড়া এলাকার নড়াইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাবু খাবার হোটেলের তৃতীয় তলার একটি টিনশেড ঘর থেকে হোটেলের নারী কর্মচারী ছায়া খাতুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ছায়া খাতুন যশোরের শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছী গ্রামের ইমান আলীর মেয়ে।
এ হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পও ছায়া তদন্ত করতে থাকে। তদন্তকালে নিহত ছায়া’র মোবাইল নম্বর ও তার জীবন আচরণ এবং আনুষঙ্গিক বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনার এক পর্যায়ে গত ৫ মে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে সন্দেহভাজন আসামি মফিজুর রহমানকে বাঘারপাড়ার ইংরা গ্রাম থেকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা মান্দারতলা এলাকা থেকে পারভেজকে আটক করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তিতে অপর আসামি আল আমিন সজীব সদর উপজেলার ঝুমঝুমপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহভাজন তিন আসামি ছায়া খাতুনকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে।
পরবর্তীতে গ্রেফতারদের সহযোগিতায় ছায়া খাতুন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী ড্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আটক তিন আসামিকে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

No comments

Thanks for you comment

Powered by Blogger.